চণ্ডীগড় আদালত কঙ্গনা রণৌতের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করেছে, অভিযোগ রয়েছে তার পরিচালিত ‘এমারজেন্সি’ চলচ্চিত্রে শিখ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অপমানজনক ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। সমাজের ভাবনার নৈতিকতা ও সিনেমার মাধ্যমে সম্প্রদায়গুলির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগ উঠে এসেছে, যা বর্তমান বলিউডের চলচ্চিত্রের কারণে আরও সংকটপূর্ণ হয়ে উঠছে। এখনও আওয়াজ তুলতে বাকি রয়ে গেছে, দেখা যাক কঙ্গনা এই বিতর্কে কীভাবে উত্তর দেয়।
কঙ্গনা ও তার “এমারজেন্সি”: ধর্মের নামে বর্বরতা কিংবা ইতিহাসের অন্ধকার দিক?
চণ্ডীগড়ের একটি আদালত সম্প্রতি বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রাণাওয়াত এবং ছবির অন্যান্য নির্মাতাদের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করেছে, ছবিটি “এমারজেন্সি” নামকরণ করা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে যে, এই ছবিতে সিখ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করা হয়েছে এবং প্রাক্তন আকাল তখতের যাত্রাবন্ধুর চরিত্রকে “সন্ত্রাসী” হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
আইনজীবীদের অভিযোগ
অভিযো Estr এন গতি, আইনজীবী রবিশঙ্কর বাসি, যিনি আইনজীবীদের সংগঠন “লॉয়ার্স ফর হিউম্যানিটি” এর সভাপতির ভূমিকায় রয়েছেন, তিনি অভিযোগ করেছেন যে ছবিটি ঐতিহাসিক ঘটনাগুলিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করছে এবং সিখ সম্প্রদায়ের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করছে।
অভিযোগের প্রেক্ষাপট
বাসি তাঁর পেলায় যুক্তি দেন যে, এমারজেন্সির ট্রেলারে প্রাক্তন যাত্রাবন্ধুকে সঠিকভাবে তুলে ধরা হয়নি। তিনি বলেন, “অভিযুক্তরা সঠিক ঐতিহাসিক তথ্যে অনুধাবন না করে সিখদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক ছবি তুলে ধরেছেন এবং জানান যে, এস অনন্ত আকাল তখতের যাত্রাবন্ধু একটি পৃথক রাষ্ট্রের দাবি করেছেন। এই প্রতিফলন সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং সিখ ও আকাল তখতের যাত্রাবন্ধুদের প্রতি অসম্মানসূচক।”
আইনগত ব্যবস্থা
অভিযোগকারীর পক্ষ থেকে কঙ্গনা রাণাওয়াত এবং দুই অন্যান্য প্রতিউত্তাকারীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে ধর্মের ভিত্তিতে গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ উস্কে দেওয়া এবং ভারতীয় সার্বভৌমত্ব ও ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এমন মিথ্যা তথ্য প্রচারের মতো অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আদালত কঙ্গনাকে ২০২৪ সালের ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে উত্তর জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
সম্প্রদায়ে উত্তেজনা সৃষ্টি
এই অভিযোগের মধ্যে কঙ্গনা এবং তাঁর ছবির নির্মাতাদের প্রতি বারবার বিতর্ক তৈরির অভিযোগও রয়েছে। বাসি বলেছেন, “এই ছবি প্রকাশ্যে গণনাটকের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজন তৈরি করছে।”
বলিউডের অন্ধকার দিক
এমারজেন্সি ছবির এই বিতর্ক বলিউডের অন্য রূপগুলোকেও প্রশ্নের সম্মুখীন করছে। অভিনেত্রী কঙ্গনা রাণাওয়াত নিজেই দাবি করেছেন, “শিল্পী এবং সমাজের মধ্যে যে ব্যবধান তৈরি হচ্ছে, তা সংস্কৃতিকে সঙ্কটময় অবস্থায় ফেলছে।” বলিউডের বর্তমান অবস্থান এবং ট্রেন্ড সম্পর্কে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।
সমাজে চলচ্চিত্রের প্রভাব
একটি চলচ্চিত্র শুধুমাত্র বিনোদন নয়, এটি সমাজের প্রতিফলন এবং কয়েকটি সময়ের বাস্তবতা। এমারজেন্সির মতো চলচ্চিত্রের মাধ্যমে যখন কিছু গোষ্ঠীকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়, তখন তা জনমানসে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। করণীয় কী? নতুন প্রজন্মের অভিনেতাদেরকে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের মাঝে নিজেদের পদের চেয়ে বেশি মানবিক দিক থেকে ভাবতে হবে।
উপসংহার
চলচ্চিত্রের মাধ্যমে গল্প বলার পদ্ধতি পরিবর্তন হচ্ছে, এবং দর্শকদের চাহিদা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সিনেমার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করতে হচ্ছে। কঙ্গনা রাণাওয়াতের “এমারজেন্সি” বিতর্ক একদিকে যেমন একটি চলমান আলোচনা শুরু করেছে, তেমনি বলিউডের তথাকথিত “সংস্কৃতি” ও “অস্তিত্ব” নিয়ে পুনর্বহাল চিন্তাভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।